৫২ থেকে ৭১ এর সকল শহীদদের স্মরণ করে এবং এই শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে তৈরি করা হয় স্মৃতি অম্লান ভাষ্কর্যটি। ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মরণেই পুনরায় তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশের একটি অন্যতম ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি স্থাপনা হলো স্মৃতি অম্লান যা এখনো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে ময়মনসিংহে। স্মৃতি অম্লান ময়মনসিংহের বকুলতলায় অবস্থিত, অর্থাৎ ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের পাশে এবং ময়মনসিংহ জাদুঘরের ঠিক সামনেই। লোকেশন দেখতে ক্লিক করুন >
১৯৫৬ সালে ময়মনসিংহের প্রথম শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছিল ঠিক এই জায়গায়তেই। সেই থেকে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে জায়গাটিতে। তবে তৎকালীন পাকিস্তানিদের কারনে সেই শহীদ মিনারটিকে রাখতে দেয়নি। তবুও সেখানে ইট কাগজের দ্বারা শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা জানাতেন তখনকার ছাত্রসমাজ ও আন্দোলনকারীরা।
তৎকালীন ময়মনসিংহ পৌরসভার (বর্তমান সিটি কর্পোরেশন) উদ্যোগে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্মাণ করা হয় স্মৃতি অম্লান। তৎকালীন পৌরসভার মেয়র ইকরামুল হক টিটুর প্রচেষ্টায় এই ভাষ্কর্যটি আবার নতুন করে রূপ পায়।
স্মৃতি অম্লান ভাষ্কর্যটি ৫২ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২১ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট। এই স্থাপনাটি তৈরি করেছিলেন শিল্পী হাসান মাহদী। ৫২ ফুট দৈর্ঘ্য দ্বারা ১৯৫২ সাল অর্থাৎ ভাষা আন্দোলনের সালকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ২১ ফুট প্রস্থ দ্বারা একুশে ফেব্রুয়ারিকে বোঝানো হয়েছে। ভাস্কর্যের বাম দিকে নির্মান করা হয়েছে লম্বা তিনটি ধাপে একটি স্তম্ভ। এর প্রথম ধাপে মাটির তৈরি টেরাকোটায় ভাষা আন্দোলন দেখানো হয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে কালো মার্বেল পাথরটি শহীদদের প্রতি শোক প্রকাশ ফোটানো হয়েছে এবং ফুলের ওপর বর্ণমালা দিয়ে বিজয়ের স্বীকৃতিকে বোঝানো হয়েছে। ভাষ্কর্যটি অনেক জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে করা হয়েছে ৩০ লক্ষ শহীদের স্মৃতি তুলে ধরা হয়েছে। সবার ডানে তৃতীয় ধাপে ঢালাই দিয়ে নির্মিত সাতটি ভার্টিক্যাল দ্বারা বোঝানো হয়েছে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠকে। ভাষ্কর্যটির পেছন দিকে টেরাকোটার মাধ্যমে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ’র ছবি দেওয়া হয়েছে। এবং পুরো ভাষ্কর্যটিতে বিভিন্ন ধরনের আলোকসজ্জা এবং ফোয়ারার মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন>> ভাষা শহিদদের স্মরণে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ কতৃক শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ
তৎকালীন ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ইকরামুল হক টিটুর পরিকল্পনায় স্মৃতি অম্লান ভাস্কর্যটি নির্মাণ করতে ব্যবহার করা হয় ইট, কংক্রিট ঢালাই, এসএস স্টিল, মার্বেল পাথর, স্যান্ড স্টোন ও টেরাকোটা এবং এই ভাষ্কর্যটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছিল ২২ লক্ষাধিক টাকা।