ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সারাদেশের জুড়ে বহুল আলোচিত এবং জনপ্রিয়। ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলা যথাক্রমে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনায় রয়েছে প্রচুর দর্শনীয় স্থান। চলুন জেনে আসি সেই স্থানগুলো সম্পর্কে।
ময়মনসিংহ বিভাগ :
ময়মনসিংহ বিভাগ বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের একটি, যা উত্তর-মধ্য বাংলাদেশে অবস্থিত। এই বিভাগের প্রধান শহর হলো ময়মনসিংহ শহর। ময়মনসিংহ বিভাগে প্রশাসনিকভাবে ৪ টি জেলা রয়েছে, এই জেলাগুলি হলো ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর। ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান নৈসর্গিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল, যেখানে নদী, হাওর, আরওয়া বাংধ, জলপ্রপাত, এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একাধিক অপূর্ব স্থান রয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগের জনসংখ্যা সমৃদ্ধ, এবং এই এলাকা ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। এই বিভাগে অনেক প্রাকৃতিক জলধারা, নদী, খাওয়া, এবং বন্য জীববিচারক অধিক পাওয়া যায়। ময়মনসিংহ বিভাগের খাবার, সাংস্কৃতিক গৌরব, এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একত্রিত করে একটি মনোরম সাহিত্য, ঐতিহ্য, ও পর্যটন উদ্যোগের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
ময়মনসিংহ বিভাগের দর্শনীয় স্থান সমূহ :
ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত সকল জেলাভিত্তিক দর্শনীয় স্থানগুলো উল্লেখ করা হলো। পর্যায়ক্রমে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সমূহের বিস্তারিত তথ্য ও ভ্রমণ গাইড দেয়া হবে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এই ময়মনসিংহ জেলার আকার সময় সময় পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলা থেকে টাঙ্গাইল মহুকুমাকে পৃথক করে একটি জেলা করা হয় এবং ১৯৭৮ সালে জামালপুর মহকুমাকে দেশের ২০ তম জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তাছাড়াও শেরপুরকে জামালপুর জেলার অন্তর্গত মহকুমায় উন্নিত করা হয়।
দর্শনীয় স্থান সমূহ : শশী লজ, গৌরীপুর লজ, আলেকজান্ডার ক্যাসেল, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা, স্বাধীনতাস্তম্ভ, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী পার্ক, ময়মনসিংহ জাদুঘর, বোটানিক্যাল গার্ডেন, নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র, মুক্তাগাছা জমিদারবাড়ি, মহারাজ সূর্যকান্তের বাড়ি, গৌরীপুর রাজবাড়ি, বীরাঙ্গনা সখিনার মাজার, রামগোপাল জমিদারবাড়ি, ফুলবাড়িয়া অর্কিড বাগান, চীনা মাটির টিলা, আবদুল জববার স্মৃতি জাদুঘর, কুমিরের খামার, তেপান্তর ফিল্ম সিটি।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থান : বড়বাজার কালিবাড়ী, ডাকবাংলো, কেওয়াটখালী রেলওয়ে কলোনী. নিউমার্কেট, কাচারিঘাট, সাহেবপাড়া।
আরও পড়ুন >> লোহার কুঠির : ময়মনসিংহের ইতিহাস ঘেরা এক নিদর্শন
জামালপুর
জামালপুর জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। বিশেষ করে কৃষি পণ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। জেলাটি রেল পথে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট, এবং বাহাদুরাবাদ ঘাট ও ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, এবং মেঘালয় (ভারত) এর সঙ্গে রাস্তা দ্বারা সংযুক্ত।
দর্শনীয় স্থান সমূহ : হজরত শাহ জামালের (রহ.) মাজার, হজরত শাহ কামালের (রহ.) মাজার, পাঁচ গম্বুজবিশিষ্ট রসপাল জামে মসজিদ (উনবিংশ শতাব্দী), নরপাড়া দুর্গ (ষোড়শ শতাব্দী), গান্ধী আশ্রম, দয়াময়ী মন্দির, দেওয়ানগঞ্জের সুগার মিলস, লাউচাপড়া পিকনিক স্পট।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থান : ধানুয়া কামালপুর, ব্রহ্মপুত্র নদের তীর শ্মশানঘাট, পৌর এলাকার ফৌতি গোরস্থান, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের ডিগ্রি হোস্টেল, পিটিআই ওয়াপদা রেস্ট হাউস, জিল বাংলা চিনি কল, ইসলামপুরের কুলকান্দি খান পাড়া।
নেত্রকোনা
নেত্রকোণা জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক এলাকা। উপজেলার সংখ্যানুসারে নেত্রকোণা বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা। এখানে রয়েছে পাহাড়ি জলপ্রপাত,লাল বালি, চীনা মাটির পাহাড়, টিলা,হাওড়,নদী, খাল, বিল।
দর্শনীয় স্থান সমূহ : উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী, বিজয়পুর পাহাড়ে চিনামাটির নৈসর্গিক দৃশ্য, রানীখং মিশন, টংক শহীদ স্মৃতিসৌধ, রানীমাতা রাশমণি স্মৃতিসৌধ, কমলা রানী দীঘির ইতিহাস, নইদ্যা ঠাকুরের (নদের চাঁদ) লোক-কাহিনী, সাত শহীদের মাজার, হজরত শাহ সুলতান কমরউদ্দিন রুমির (রহ.) মাজার, রোয়াইলবাড়ি কেন্দুয়া।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থান : ঘাঘটিয়া নদীর তীর, মগরা নদী সেতু, কলমাকান্দা নাজিরপুর, মোহনগঞ্জ বটতলী, নেত্রকোণা নাগরা কৃষি ফার্ম, মুক্তাপাড়া ব্রীজ, চল্লিশা রেল সেতু ইত্যাদি।
শেরপুর
শেরপুর জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। পূর্বে ১৮২৯-২০১৫ পর্যন্ত এটি ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ছিল। শেরপুর জেলার আয়তন ১,৩৬৩.৭৬ বর্গকিলোমিটার। শেরপুর জেলা পূর্বে জামালপুর জেলার একটি মহকুমা ছিল। ১৯৮৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এটিকে জেলায় উন্নীত করা হয়।
দর্শনীয় স্থান সমূহ : গড় জরিপার দুর্গ , দরবেশ জরিপ শাহের মাজার, বারদুয়ারী মসজিদ, হযরত শাহ কামালের মাজার, শের আলী গাজীর মাজার, কসবার মুগল মসজিদ, ঘাঘরা লস্কর বাড়ী মসজিদ, মাইসাহেবা মসজিদ, নয়আনী জমিদারের নাট মন্দির, আড়াই আনী জমিদার বাড়ি, পৌনে তিন আনী জমিদার বাড়ি, গজনী অবকাশ কেন্দ্র।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্থান : ঝিনাইগাতির আহমদ নগর, বগাডুবি ব্রীজ, জগৎপুর গ্রাম, নাকুগাঁও, নালিতাবাড়ী তন্তর, কাটাখালি ব্রীজ, সোহাগপুর, সূর্যদি গ্রাম, রামচন্দ্রকুড়া ফরেস্ট ক্যাম্প, শেরিব্রীজ ইত্যাদি।
এছাড়াও ময়মনসিংহের বিভাগের আরো দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। আপনার জানা মতে উক্ত স্থান ছাড়াও যদি দর্শনীয় স্থান থাকে তাহলে আমাদের ফেসবুক পেইজে ম্যাসেজ করে জানাতে পারেন।