বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ এর সাবেক সদস্য, সাবেক ধর্মমন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান,সাবেক ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার ইন্তেকাল করেছেন।এতে ময়মনসিংহের আওয়ামী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ ময়মনসিংহে শোকের আবহ নেমে এসেছে।
রোববার রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহের নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে।
জানাজার নামাজ
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার এর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে অদ্য বাদ আসর ২৮/০৮/২০২৩ ইং সোমবার আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দান, ময়মনসিংহ।
প্রধানমন্ত্রীর শোক
আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন সর্বস্তরের জনগণ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার এর জীবন বৃত্তান্ত
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার ১৯৪২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম আব্দুর রাজ্জাক এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা খাতুন।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার ১৯৪২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবদুর রেজ্জাক এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা খাতুন।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তৎকালীন ঢাকা হল বর্তমানে ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ হলের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫৮ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। সাংগঠনিক জীবনে অধ্যক্ষ মতিউর রহমান দুইবার ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ১৯৯৬ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মোট ১৮ বছর দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সম্মানিত সদস্য হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ১৪৯ (ময়মনসিংহ-৪) আসন থেকে ১৯৮৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে তিনি জাতীয় সংসদের অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নবম সংসদে তিনি রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ি কমিটি’র সভাপতি, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র সম্মানিত সদস্য, জাতীয় সার সমন্বয় ও বিতরণ কমিটি’র সদস্য, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সদস্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া তিনি ১৯৯৬ সনে একবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার এবং ২০০৮ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত পরপর তিনবার সিন্ডিকেট মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।।তিনি স্বাধীনতার পর থেকে মোট তিনবার ময়মনসিংহ পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মতিউর রহমান রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন সময়ে কারাবরণ করেন।
আরও পড়ুন >> Mymensingh to Dhaka train schedule | ময়মনসিংহ ট্রেনের সময়সূচি
১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সন পর্যন্ত দুই মেয়াদে দীর্ঘ ২৩ মাস কারাবরণ করেন। তিনি ২০০২ সালে ময়মনসিংহের চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলার মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করেন। শত প্রলোভনের মুখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি অবিচল থেকে তিনি তাঁর সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে থাকেন।
সম্মাননা
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অকৃত্রিম অবদানের জন্য অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ‘মুজিব দর্শন বাস্তবায়ন পরিষদ’ কর্তৃক ২০০০ সালে ‘বঙ্গবন্ধু পদক’ লাভ করেন। অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্যার রাজনীতি, শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিক পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ইউনাইটেড কালচারাল কনভেনশন, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ২০০৫ সালে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার’ পদকে ভূষিত হন। এছাড়ও তিনি আন্তর্জাতিক জীবনী কেন্দ্র ইংল্যান্ড কর্তৃক ২০০২ সালে ২১ শতকের অসামান্য বুদ্ধিজীবী’ পদকে ভূষিত হন। তিনি অভিনয়, নাটক, আবৃত্তিসহ নানা প্রকার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ১৯৬৭-৬৮ সেশনে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে ফুটবল খেলা প্রতিযোগিতায় বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০২২ সালে একুশে পদক লাভ করেন।